একটু সমস্যায় পড়লে সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা ছুটে যান তার কাছে। ব্যাটিং স্ট্যান্স, গ্রিপ, ফুটওয়ার্ক কিংবা অন্য কোনো সূক্ষ্ম ও খুঁটিনাটি সমস্যায় এ মুহূর্তে দেশি কোচদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বড় দাওয়াই।
সেই নাজমুল আবেদিন ফাহিম টিম বাংলাদেশের বর্তমান খারাপ অবস্থার সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করেছেন। তার ধারণা, টিম বাংলাদেশের ভেতরে এখন দুই শ্রেণির ক্রিকেটারের সংখ্যা বেশি। এক ভাগ নিজেদের জায়গা নিয়ে শঙ্কিত, আরেক পক্ষ দলে জায়গা নিশ্চিত হলেও ফর্ম নেই।
এখন যদি প্রশ্ন করা হয়, কোন দলে কারা? তাহলে সবার আগে বলতে হবে অধিনায়কের কথাই। বাংলাদেশ অধিনায়কের দলে নিজের অবস্থান নিয়ে চিন্তা নেই। কিন্তু ব্যাটে রান নেই। তামিমের ভেতরে বড় স্কোরের তাগিদ ও তাড়া- দুই’ই আছে। একই তাগিদ মিডল অর্ডার মোহাম্মদ মিঠুনের ভেতরেও।
অন্যদিকে সৌম্য সরকার আর নাজমুল হোসেন শান্ত জানেন না, দলে তাদের জায়গা নিশ্চিত কি না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব আল হাসান দলে থাকার পরও তিন নম্বরে খেলানো হয়েছিল শান্তকে। নিউজিল্যান্ডে এসে আবার প্রথম ম্যাচে ওই পজিশনে খেললেন সৌম্য। দুজনই ব্যর্থ।
বোলিংয়ের দিকে তাকালে তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদরা কায়মনে চাচ্ছেন দলে অবস্থান নিশ্চিত করতে। কেননা দলে মোস্তাফিজুর রহমানের জায়গা মোটামুটি পাকা হলেও বাকি পেসাররা জানেন না, কবে কখন তাদের মাঠে নামতে হবে কিংবা আদৌ সুযোগ মিলবে কি না। মিললেও পরের ম্যাচে বাদ পড়বেন কি না, সেই চিন্তাও থাকে।
একটি দলে টিকে থাকা আর ফর্ম ফিরে পাবার তাগিদ অনুভব করা ক্রিকেটার বেশি হওয়াটাকে নেতিবাচক চোখে দেখছেন কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম।
তার ভাষায়, ‘যে দলের অর্ধেকের বেশি ক্রিকেটারের ভেতরে দলে জায়গা পাকা করা ও ফর্মে ফেরার জোর তাগিদ, সেই দলের আসলে ভালো খেলা বিশেষ করে স্বাভাবিক ও স্বচ্ছন্দ্যে খেলা কঠিন।’ প্রথম ম্যাচের পোস্টমর্টেম করতে গিয়ে জাগো নিউজের কাছে ঠিক এমন ব্যাখ্যাই দিয়েছিলেন কোচ ফাহিম।
তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, এই ফর্মে ফেরার তাগিদ আর দলে অবস্থান নিশ্চিত করার চিন্তা ভেতরে থাকার অর্থ-মানসিক অস্থিরতায় ভোগা। মনের মধ্যে একটা অন্যরকম অস্বস্তি। এরকম অবস্থায় স্বাভাবিক পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যায়।
এমনিতেই নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন বিদেশি দলগুলোর জন্য কঠিন। তার মধ্যে একাদশে পরীক্ষিত পারফরমার একদম হাতে গোণা। যারা আছেন, তারাও ফর্মে নেই।
তাই সবমিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের পিচের গতি ও বাউন্সের সাথে খাপ খাইয়ে আবার নিজেদের ভেতরের অস্থিরতা পাশ কাটিয়ে পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
সেই মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে ভালো করতে চাই একটি ভালো ইনিংস, একটি দুর্দান্ত স্পেল। তামিম-মিঠুন আর তাসকিন-হাসানরা সেটা করতে পারলেই অন্য বাংলাদেশকে দেখা যাবে। সেই আশায় কোটি টাইগার ভক্ত-সমর্থক।
s
Leave a Reply